
একটি জাতি,দেশ বা রাষ্ট্রের স্বাধীনতা হচ্ছে মর্যাদাপূর্ন অবস্থান। এ অবস্থানে একটি দেশের নাগরিক বা জনগোষ্ঠি স্বশাসওে সুযোগ পায় এবং নিজ দেশ বা ভুখন্ডের ওপর সার্বভৌম ক্ষমতা চর্চা করতে পারে ,বাইরের কোন শক্তির নিয়ন্ত্রন মুক্ত হয়ে। অন্যের য়িন্ত্রন বা প্রভাবমুক্ত থাকার নামই স্বাধীনতা। এ বিপরিতে রয়েছে পরাধীনতা। পরাধীনতা কেউ চায় না। স্বাধীনতা সবারই কাম্য। সে জন্যই বলা হয় স্বাধীনতাহীনতায় কেউ বাঁচতে চায় না। এই স্বাধীনতা অর্জনের জন্য একটি জাতি বড় ধরনের ক্ষতি স্বীকার করতেও দ্বিধা করে না। স্বাধীনতার প্রশ্নে আপোষ করে না। আমার মনে হয় আল্লাহর সৃষ্টি প্রাণীকুলেই সব কিছুই স্বাধীন ভাবে পৃথিবীতে বাঁচতে চায়। পৃথিবীর অনেক দেশই সহজে স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে; আবার
অনেক অনেক দেশ থ্যাগ স্বীকার কওে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশ তেমনি একটা দেশ যে দেশকে রক্তসাগর পেরিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। মাত্র ৯ মাসের সশ¯্র মুক্তিযুদ্ধেও মধ্য দিয়ে আমার ছিনিয়ে এনেছি স্বাধীনতার লাল সূর্য। স্বধীনতাযুদ্ধ আমাদের গর্বের অধ্যায়।
২৬ শে মার্চ ২০২২ আজ । বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তি পালন করছি আমরা। এটি আমাদেও সমগ্র জাতির জন্য গর্বের বিষয়।এদিকে আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরন করছি আমাদের সে সকল শঞীদ মুক্তিযোদ্ধাদের, যাদেও রক্তের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি এই স্বাধীন বাংলাদেশ। তারা স্বাধীন সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্নকে সামনে রেখেই সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন। আমাদের দায়িত্ব সুখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ায় নিজেদের নিয়োজিত করা। কিন্তু আমরা সে দায়িত্ব কতটুকু পালন করতে পেরেছি,সে প্রশ্নও রয়েছে।
আমাদের স্বাধীনতার চেতনা ছিল সব ধরনের শোষন থেকে মুক্ত থাকা। অর্থনৈতিক বৈষম্য দুর করা এবং মানুষের ন্যায্য গনতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা।গনতন্ত্রহীনতা থেকে দেশকে মুক্ত করা। বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে সাধারন মানুষের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।আমার পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠির বাহুমুক্ত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার আওয়াজ তখনি তুলি, যখন আমরা দেখলাম তারা আমাদের মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চায়। আমাদেরকে চরম অর্থনৈতিক শোষন আর বৈণম্যেও শিকাওে পরিনত কর খর্ব করতে চায় আমাদেও রাজনৈতিক ও গনতান্ত্রিক অধিকার। সে সব অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ছিল আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম।
আমরা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে গৌরবজনক সফলতা পেয়েছি। কিন্তু যেসব অধিকার নিশ্চিত করার মানসে আমরা স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছিলাম,স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পেরিয়েও আমরা কি তা নিশ্চিত করতে পেরেছি? সচেতন, বিবেকবান মানুষ অবশ্য স্বীকার করবেন যে আমরা তা এখনো অর্জন করতে পারি নি। এখনো অর্থনেতিক বৈষম্য কাটেনি। গনতন্ত্র আজ বিপন্ন। এখনে আমাদের সমালোচনা শুনতে হয় গনতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে। যদিও ইতোমধ্যে আমরা উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হয়েছি। চুড়ান্ত তালিকায় উন্নীত হতে আমাদের আরো ক’বছর সময় লাগবে। কিন্তু আমাদেও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যদি সহনশীলতা ও অস্থিরতা না থাকতো তবে আমরা তো আরো উন্নত দেশের মর্যাদায় আসন পেতাম। কিন্তু কেন তা পারিনি। তা জানতে স্বাধীনতার ৫০তম বছরে দাড়িয়ে তা আত্মসমালোচনা করা দরকার।